প্রকাশিত: ১৮/০৬/২০১৮ ৯:২২ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:৪৭ এএম

হুমায়ুন রশিদ,টেকনাফ::
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক ঘটনায় আইন-শৃংখলা বাহিনীর কথিত রোহিঙ্গা সোর্সসহ ৩জন রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, ১৮ জুন সকাল সাড়ে ৮টারদিকে পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানের পরও আবারো উপজেলার লেদায় অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তি সংলগ্ন সামাজিক বাগানে জুয়ার আসর ভেঙ্গে দিতে যায় পূর্ব লেদার মৃত লাল মিয়ার পুত্র মুফিজ আলম। জুয়ার আসরের মালিক পূর্ব লেদা লামার পাড়ার মৃত জহির আহমদের পুত্র মাদকাসক্ত মহি উদ্দিন ক্ষুদ্ধ হয়ে গালি-গালাজ করে। এক পর্যায়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে মুফিজ আলমের দোকানে গিয়ে দারকোপ দেয়। এতে মুফিজ আলমের হাত দায়ের আঘাতে রক্তাক্ত হয়। এসময় আলীখালীর শামসুল আলম মিস্ত্রীর পুত্র হেলাল উদ্দিন বাঁধা দিতে গিয়ে হাতে কোপ লেগে রক্তাক্ত হয়। পরে উপস্থিত লোকজন সংঘর্ষ থামিয়ে রক্তাক্তদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এরপর হেলালকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে রোহিঙ্গা নেতাদের নিকট জানতে চাইলে ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও টাকার লেন-দেন নিয়ে এই জাতীয় ঘটনা বলে মনে করেন।
এই ব্যাপারে হামলাকারী মহি উদ্দিনের সাথে কথা বলতে চাইলে মোবাইল সংযোগের মাধ্যম না পাওয়ায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আহত মুফিজ আলমের সাথে যোগাযোগ করলে বলেন, এর আগে পুলিশ এসব জুয়ার আসর গুড়িয়ে দেয়। এরপর আজ সকালে আবার বসালে আমি বন্ধ করতে বলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
অপরদিকে সকাল ১১টারদিকে নয়াপাড়া রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আই-ব্লকের নতুন ক্যাম্পের দোকানে মৃত মিয়াজী মোহাম্মদ হোছনের পুত্র আজিজুল হক আজিজ (৪৫) বসেছিল। এইচ ব্লকের মোহাম্মদ জলিল মিস্ত্রীর পুত্র মোঃ সাদেক (২৮) প্রকাশ ডাকাত সাদেইক্কা এসে বার বার কেন পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি দিয়ে ধাওয়া করে জানতে চাইলে আজিজ বলেন, আমরা ভাল মানুষকে ধাওয়া করিনা। চোর, ডাকাত, ইয়াবা চোরাকারবারী ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের ধাওয়া করি বলার সাথে সাথে ছুরি বের করে চোখ ও মুখে ছুরিকাঘাতের পর বীরদর্পে চলে যায়। পাশর্^বর্তী উপস্থিত সাধারণ রোহিঙ্গারা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ক্যাম্প হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা দেওয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এই ব্যাপারে নয়াপাড়া ক্যাম্প পুলিশের আইসি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালে লেদা রোহিঙ্গা বস্তির ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এরপর নয়াপাড়া ক্যাম্পে ব্লক মাঝি মারফতে ছুরিকাঘাতের সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত ব্যক্তি উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করি। সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষ্যে জুয়ার আসর বসানোকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, দারকোপে রক্তাক্ত ও কথিত সোর্স চুরিকাঘাত হওয়ার ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাসহ গ্রামীণ মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে।

পাঠকের মতামত